আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন?- প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিবেন

চাকরির সাক্ষাৎকারে যে প্রশ্নের সম্মুখীন প্রায়শই হতে হয় তাই হল নিজের সম্পর্কে বলা। সাধারণত সাক্ষাৎকারের শুরুতেই নিয়োগকর্তা এই ধরণের প্রশ্নটি করে থাকেন। বলা হয় এই একটি প্রশ্ন ঠিক করে দেয় চাকরিদাতা আপনাকে নিবেন কি নিবেন না। আবার এটিই অন্যতম সুযোগ নিজেকে দক্ষ হিসেবে নিয়োগকর্তার কাছে তুলে ধরা। কিন্তু কিভাবে এবং কেমন করে জানাবেন আপনার সম্পর্কে , কিভাবে বলবেন আপনার কথা। আসুন জেনে নেই।


কেন এই প্রশ্নটি করা হয়

প্রশ্নটির উত্তর জানার আগে জেনে নেয়া উচিত চাকরিদাতারা এই প্রশ্নটি কেন করে থাকেন। তাহলে উত্তরটি তৈরি করতে সহজ হয়। নিয়োগকর্তা এই প্রশ্নটি করে থাকেন কারন:

১. তিনি আপনাকে জানতে চান , অর্থাৎ আপনি প্রার্থী হিসেবে কতটা যোগ্য তা বুঝতে চান।

২. আপনি নিজেকে কত ভালো করে উপস্থাপন করতে পারেন তা দেখতে চান।

৩. সর্বোপরি আপনার ভেতরের জড়তাকে ভেঙে আপনাকে সহজ ও সাবলীল করে তুলতে চান যাতে পরবর্তী প্রশ্নগুলোতে আপনি সহজ ও সাবলীল ভাবে উত্তর দিতে পারেন।


যা বলবেন

আপনার সম্পর্কে বলুন। কেবল আপনার সম্পর্কে। কোনো ভাবেই অপ্রাসঙ্গিক কিছু বলা যাবে না। মনে করুন আপনি একটি দোকানে মোবাইল কিনতে গেছেন, আপনার চোখে একটি সুন্দর মোবাইল পড়লো, তো যথারীতি আপনি সেলস ম্যানকে জিজ্ঞাসা করলেন মোবাইলের ফিচার সম্পর্কে বলতে।ভাবুন ঠিক এই সময় যদি সেলস ম্যান মোবাইলটি কিভাবে বানানো হয়েছে তা বলে আপনি কি আর শুনতে আগ্রহী হবেন নাকি মোবাইলের ফিচার সম্পর্কে বললে, যা আপনার কাজে আসবে তা শুনতে আপনি বেশি আগ্রহী হবেন? আপনার সম্পর্কে বলাটাও ঠিক এমন। এমন কিছু বলুন যা চাকরিদাতাদের আপনার সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলে। এমন কিছু নয় যা অপ্রাসঙ্গিক। অর্থাৎ এমন কিছু যা অন্য প্রার্থীদের থেকে আপনাকে আলাদা করে। আপনাকে সব থেকে সেরা প্রার্থী হিসেবে প্রমাণ করে। তাই এই ক্ষেত্রে যা বলতে পারেন তা হলো:

১. নিজেকে দিয়ে শুরু করুন , আপনার স্কুল , পড়ালেখা , কোন বিষয়ের উপর পড়ালেখা করেছেন তা বলুন।

২. কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য থেকে থাকলে তা উল্লেখ করুন – যেমন স্কলারশিপ, প্রথম স্থান অধিকার করা ইত্যাদি।

৩. তবে আপনার যদি কাজের অভিজ্ঞতা থেকে থাকে সেক্ষেত্রে পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতার কথা বলুন, আপনার সাফল্য , প্রাপ্তি , দক্ষতা ইত্যাদি বক্তব্যের মাঝে তুলে ধরুন।

৪. যে দুটি গুণ সম্পর্কে বলেছেন তার প্রমাণ দিন , কেন মনে করেন এইগুলো আপনার ভালো গুণ।

৫. একটি দুর্বলতার কথা বলুন, এবং সাথে সাথে বলুন কিভাবে দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন।

৬. ২ থেকে ৩ মিনিটে পুরো বক্তব্যটি শেষ করুন।


যা বলবেন না

এই ধরনের প্রশ্নের জবাবে, কিছু জিনিস যা কখনোই বলা ঠিক নয়, এই বিষয়গুলো হলো:

১. আপনার পারিবারিক বিষয়গুলো তুলে আনা , যেমন আপনার বাবা কি করেন , মা কি করেন , পরিবারে কয়জন ইত্যাদি।

২. যে পদের জন্য সাক্ষাতকার দিচ্ছেন তার সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় বা কোনো ভাবেই সংশ্লিষ্ট পদে কাজে আসবে না এই রকম কোনো গুণের কথা বলা।

নিজের সম্পর্কে আমরা সবাই জানি।কিন্তু সঠিকভাবে নিজেকে তুলে ধরতে না পারলে তা কখনোই ভালো ফল এনে দিতে পারে না। অন্যদিকে নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপন শত শত প্রার্থী থেকে নিজেকে আলাদা করে তুলে ধরতে সহায়তা করে। যা একজন সফল কর্মীর পরিচায়ক। তাই নিজেকে জানুন আর নিজেকে তুলে ধরুন সফল ভাবে।

Leave comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *.