জীবনযাপন

জেনে নিন কোন চারটি খাবারে সবচেয়ে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে

প্লাস্টিকের বোতলের পানিতে ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিকের টুকরা পর্যন্ত জমা হতে পারে
ছবি: পেক্সেলস

মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে পেটফাঁপা, অস্বস্তি, বমি বমি ভাবসহ গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি মরণব্যাধি ক্যানসারও হতে পারে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং ন্যানো প্লাস্টিক ফুসফুস, লিভার, লিঙ্গ, রক্ত, প্রস্রাব, মল, মায়ের দুধ এবং এমনকি অস্থায়ী ভ্রূণে প্রবেশ করছে।

কোন কোন খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যায়, দেখে নেওয়া যাক—

চিনি ও লবণ

চিনি ও লবণ ছাড়া বাঙালি রান্নাঘর কল্পনা করা যায় না! কিন্তু এই চিনি ও লবণেও মাইক্রোপ্লাস্টিক লুকিয়ে থাকে। পরিবেশবিষয়ক গবেষণা সংস্থা টক্সিকস লিংকের করা ‘মাইক্রোপ্লাস্টিকস ইন সল্ট অ্যান্ড সুগার’ শিরোনামের একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, তারা ১০ রকম লবণ ও ৫ রকম চিনির ওপর পরীক্ষা করে দেখেছে, চিনি ও লবণে মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে। কারণ, এগুলো প্লাস্টিক দিয়ে মোড়কজাত করা হয় বা প্লাস্টিকের জারে সংরক্ষণ করা হয়। আর এই প্লাস্টিক থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক বের হয়। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, কালো লবণ এবং সামুদ্রিক লবণে বেশি পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে।

টি-ব্যাগেও সবচেয়ে বেশি পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে
ছবি: পেক্সেলস

টি-ব্যাগ

আমরা দিনে কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার চা পান করি। সেটা লাল চা হোক বা দুধ চা। কিন্তু এই টি-ব্যাগেও সবচেয়ে বেশি পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

টি-ব্যাগে থাকা প্লাস্টিকগুলো প্রাকৃতিকভাবে পচে যেতে শত শত বছর সময় লাগতে পারে। যখন গরম পানিতে টি-ব্যাগ চুবানো হয়, তখন টি-ব্যাগে থাকা মাইক্রোপ্লাস্টিকের ক্ষতিকারক কোটি কোটি প্লাস্টিক কণা পানিতে মিশে যায়। এই মিশে যাওয়া প্লাস্টিক কণার বেশ কিছু কণা মানুষের কোষে ঢুকতে পারে। তাই চাপ্রেমীদের এই বিষয়ে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সামুদ্রিক খাবারে

সমুদ্রের পানিতে আমরা যে প্লাস্টিক দ্রব্য ফেলি, সেগুলো সমুদ্রের মাছ খায়
ছবি: পেক্সেলস

আপনি কি সামুদ্রিক খাবার বেশি পছন্দ করেন? তাহলে আপনার জন্য খারাপ খবর হলো এই সামুদ্রিক খাবারেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। কারণ, সমুদ্রের পানিতে আমরা যে প্লাস্টিক দ্রব্য ফেলি, সেগুলো সমুদ্রের মাছ খায়। মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো জমা হতে থাকে আর আমরা সেই মাছ খাওয়ার ফলে মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো আমাদের দেহে জমা হতে থাকে। ২০২০ সালের একটি সমীক্ষায় বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

বোতলজাত পানি

আমরা তো প্রতিনিয়ত প্লাস্টিকের বোতলে পানি পান করি। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই বোতলের পানিতে ২ লাখ ৪০ হাজার প্লাস্টিকের টুকরা পর্যন্ত জমা হতে পারে। এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি আব সায়েন্সেসের জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে। একটি বিশেষ ইমেজিং কৌশল ব্যবহার করে জানা গেছে, প্রতিবার বোতলজাত পানি ব্যবহারে প্লাস্টিকের হাজার হাজার ক্ষুদ্র কণা পেটে ঢুকে যায়। এই সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের কণাগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ হলো ন্যানো প্লাস্টিক, যা মানুষের কোষ এবং টিস্যুতে ঢুকে পড়তে পারে। পাশাপাশি রক্ত ও ব্রেনের বাধা অতিক্রম করতে পারে। আরেকটি খারাপ খবর হলো, আপনি যত বেশি বোতলের মুখ খুলবেন বা বন্ধ করবেন, তত বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক পানিতে প্রবেশ করবে।

সূত্র: টাইমস আব ইন্ডিয়া

Leave comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *.