যুক্তরাষ্ট্রকে পাট-বস্ত্র-জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান

পাট, বস্ত্র ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রীর বিকল্প হিসেবে দেশে-বিদেশে পাটপণ্যের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে।’  

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) হেলেন লাফেভের সঙ্গে বৈঠককালে এ আহ্বান জানান উপদেষ্টা।

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে ২৮২ ধরণের পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পাটজাত বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে পাট রফতানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত পাটের ৭০ ভাগ বিদেশে রফতানি হচ্ছে।’

বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা বলেন, ‘পাটকে বলা হয় বাংলাদেশের সোনালি আঁশ। এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। একটা সময় পাট ছিল দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত। বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে এ ধারায় কিছুটা ছেদ পড়লেও সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। আগামীকাল ১ অক্টোবর থেকে দেশের সব সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে সুপারশপগুলোতে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ক্রেতাদের জন্য রাখা হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি পাটকল ও বস্ত্রকলগুলিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ রয়েছে। শিল্প কারখানাগুলো কৌশলগতভাবে যোগাযোগের জন্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। অধিকাংশই বন্দরের কাছে। এছাড়াও এ সব সেক্টরে আমাদের প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল রয়েছে।’

নৌপরিবহন উপদেষ্টা মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের ডকইয়ার্ড নির্মাণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি সহায়তা কামনা করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মেরিন অ্যাকাডেমিগুলো থেকে দক্ষ ও মেধাবী নাবিক তৈরি করা হচ্ছে। তারা পেশাদারিত্বের সঙ্গে আন্তর্জাতিক শিপিং পরিচালনা করে দেশের জন্য সুনাম বয়ে নিয়ে আসছে।’

মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বাংলাদেশের তৈরি রেডিমেড গার্মেন্টসের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য বিভিন্ন পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের গৌরবময় ৫০ বছর পার হয়েছে।’

হেলেন লাফেভ বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবসময় বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামীতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভীত তৈরির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

বৈঠকে আরও ছিলেন– বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) সঞ্জয় কুমার বণিকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

Source: বাংলা ট্রিবিউন ।

Leave comment

Your email address will not be published. Required fields are marked with *.